প্রিন্ট এর তারিখঃ Sep 22, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 13, 2025 ইং
শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে

অভয়নগর প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগরে ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘পারফরমেন্স বেজড গ্রান্ডস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস’ (পিবিজিএসআই) প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগপত্র বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের নামে পিবিজিএসআই কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য এক লাখ টাকার অনুদান আসে। ২০ জন শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা করে পৃথক চেক দেওয়া হয়। চেকগুলো স্বাক্ষর করিয়ে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে পাচঁ হাজারের পরিবর্তে দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার করে আমাদের হাতে নগদ টাকা প্রদান করেন। টাকা কম দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বিভিন্ন খরচের কথা বলে আমাদেরকে চুপ থাকতে বলেন তারা। প্রাপ্য টাকা ফিরে পেতে ও জড়িত প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
৮ম শ্রেণির সুমাইয়া খাতুনের পিতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার চেকে স্বাক্ষর করিয়ে আমার মেয়ের হাতে নগদ দুই হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আত্মসাত করেছেন। কেন তারা শিক্ষার্থীদের পাওনা টাকা আত্মসাত করেছেন তার বিচার হওয়া দরকার।’
একই শ্রেণির তাহমীনা জামান তিথীর পিতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকার চেকে স্বাক্ষর করিয়ে আমার মেয়েকে দেওয়া হয়েছে তিন হাজার টাকা। টাকা কম দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জড়িত।’
ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) অচিন্ত কুমার মন্ডল বলেন, ‘আমার স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার গরীব। ২০ জন শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। ওরা টাকা উঠিয়ে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করেছে। এখানে টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ ছিলনা।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, ‘স্কুলে ১৩০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলোচনা শেষে পাঁচ হাজার টাকা করে ২০ জন ছাত্রীকে চেক দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই টাকা শিক্ষার্থীরা সমন্বয় করে নিয়েছে। আমাকে নিয়ে একটি অভিভাক চক্র ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কারণ আমি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি পদে রয়েছি।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পিবিজিএসআই’র টাকা ভাগাভাগির কোনো সুযোগ নেই। ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) থেকে তদন্তকাজ শুরু করা হবে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগপত্র পাওয়ার পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ