প্রিন্ট এর তারিখঃ Sep 22, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 16, 2025 ইং
ধরা পড়ছে বাহক, অধরা হোতা: যশোর সীমান্তে থামছে না স্বর্ণ পাচার

বেনাপোল প্রতিনিধি : দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে সাম্প্রতি যশোর সীমান্ত পথে ভারতে স্বর্ন পাচার বেড়েছে। আর স্বর্ন পাচারের অর্থ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তবে বর্ডার গার্ড বিজিবির সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে স্বর্ন আটকও বেড়েছে। পাচার প্রতিরোধে কাজ করছে বিজিবির ৪৯ ও ২১ ব্যাটালিয় এবং পুলিশ সদস্যরা।
ভারতে পাচারকালে চলতি বছরের ৮ মাসে কেবল ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অভিযানে ২৩ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৩ টাকা মুল্যের ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্নবার উদ্ধার হয়েছে। এসময় চোরাচালানের সাথে জড়িত ১৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। তবে স্বর্নবহনকারীরা গ্রেফতার হলেও বরাববরই ধরা ছোওয়ার বাইরে থাকে গডফাদারেরা। তবে বিজিবি বলছে, পাচারের সাথে জড়িত মুল হোতাদের সনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সীমান্তের সুত্রগুলো জানায়, আর কদিন বাদেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা। এসময় সাজ সজ্জার জন্য চাহিদা বাড়ে স্বর্নালঙ্কের। যার কারনে বছরের এ সময় প্রতিবেশি দেশ ভারতে দেখা যায় স্বর্ন পাচার বাড়তে। যোগাযোগ সহজ হওয়ায় পাচারকারীরা যশোরের বেনাপোল রুট বেশি ব্যবহার করে থাকে। কখন সীমান্তের পথ কখনো আমদানি,রফতানি পণ্য পরিবহনকারী যানবাহন এবং পাসপোর্টধারীদের মাধ্যমে স্বর্ন বহন করা হয়ে থাকে।
সীমান্ত সুত্রগুলো বলছে,দুবাই,মালেশিয়া,আফ্রিকা,সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে দেশে আসে স্বর্ণের চালান। পরে ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে করে একটি গ্রুপ স্বর্ণ নিয়ে আসে যশোরে। পরে হাত পরিবর্তন হয়ে চৌগাছা,বেনাপোল ও সাতক্ষীরা সীমান্তে আনে আর একটি চক্র।সীমান্তে নির্ধারিত স্থানে স্বর্ণের চালানটি হাতবদল হয়ে চলে যায় স্থানীয় এজেন্টদের হাতে।চোরাচালান রোধে সীমান্তে কাজ করে থাকে বিজিবি,পুলিশ ও কাস্টমস ইমিগ্রেশন। তবে পাচার রোধে সবচাইতে বেশি দেখা গেছে বিজিবির। চলতি বছরে ভারতে পাচারের চেষ্টা কালে কেবল ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবি সদস্যরা ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ন উদ্ধার করেছে। তবে এসময় স্বর্নবহনকারী কয়েকজন আটক হলেও মুল হোতাদের ধরতে পরবর্তীতে তেমন পদক্ষেপ না থাকায় স্বর্নপাচার কোন ভাবে বন্ধ হচ্ছে না। দেশী ও আন্তর্জাতিক একটি শক্তিশালী পাচারকারী চক্র নানান কৌশল অবলম্বন করে যশোর রুট ব্যবহার করছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে সীমান্তে অপরাধ মুলক কর্মকান্ডও বাড়ছে। মাদকসহ নেশা জাতীয় দ্রব চোরাচালানে ধ্বংষ হচ্ছে যুব সমাজ।
মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষনো মন্ডল জানান, পুজায় আগে বেড়েছে স্বর্নপাচার। স্বর্ণ যাচ্ছে আর বিনিময়ে আসছে মাদকসহ বিভিন্ন নেশা জাতক দ্রব। মাঝে মধ্যে কেবল স্বর্ন বহনকারিরা আটক হলেও মুল হোতারা থাকছে ধরা ছোওয়ার বাইরে। তাদের ধরতে প্রশাসনের আগ্রহ বাড়াতে হবে।
সীমান্তবাসী রুবেল হোসেন জানান, স্বর্ন পাচার বেড়ে যাওয়ায় সীমান্ত অপরাধীদের আনাগুনা বেড়েছে। এতে আতঙ্কে থাকতে হয়।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, আগে সীমান্ত পথে চোরাচারাল বেশি রাজস্ব হলেও এখন বৈধ পথে পন্যবাহী ট্রাক ও পাসপোর্টধারীদের মাধ্যমে ভারতে স্বর্ন পাচার হচ্ছে বেশি। এসব চোরাচালের সাথে দুই দেশের ট্রাক চালক ও পাসপোর্টধারীরা জড়িয়ে পড়ছে।
যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, স্বর্নপাচার প্রতিরোধসহ যে কোন ধরনের অপরাধ মুলক কর্মকান্ড বন্ধ করতে সীমান্তে বিজিবি সদস্যা আন্তরিক হয়ে কাজ করছে। ৮ মাসে ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ণও ১৭ চোরাকারবারি আটকের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বর্ন পাচারের সাথে জড়িত মূল হোতাদের আটকের চেষ্টা চলছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ