প্রিন্ট এর তারিখঃ Sep 22, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 17, 2025 ইং
কলেজ শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি নিজের বিচারের দাবিতে

মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরের সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান নিজের বিচার দাবি করে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে কলেজের ফটকে ব্যানার ঝুলিয়ে তিনি এই কর্মসূচি পালন করেন। এই সংক্রান্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খবর পেয়ে আধাঘন্টা পর কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম ওই শিক্ষকের কর্মসূচি ভাঙ্গিয়ে তাকে অফিস কক্ষে নিয়ে গেছেন।
হাফিজুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। তাঁর অভিযোগ, তাঁর-ই দুই সহকর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুহুল কুদ্দুস টিটো ও ভূগোল বিভাগের আব্দুস সালাম কলেজের ফেসবুক ম্যাসেন্জার গ্রুপে তাকে নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা লিখেছেন। যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। তিনি কথাগুলোর ভার নিতে না পেরে আত্মহত্যার করতে চেয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে নিজের বিচার দাবি করে তিনি কলেজের ফটকে অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন।
হাফিজুর রহমান বলেন, কলেজে নিয়মিত কমিটি গঠনের উদ্দেশে শিক্ষক প্রতিনিধি (টিআর) নির্বাচন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে। নিয়মিত কমিটিতে তিনজন টিআর নির্বাচিত হবেন। আমি একজন প্রার্থী। বর্তমান এডহক কমিটির টিআর রুহুল কুদ্দুস টিটো ও শিক্ষক আব্দুস সালামসহ আমরা পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষক আমাকে ভোট দিতে চেয়েছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে টিটো ও আব্দুস সালাম আমার সম্পর্কের কলেজের ম্যাসেন্জার গ্রুপে উল্টোপাল্টা লিখেছেন।
হাফিজুর রহমান বলেন, ওই দুই শিক্ষকের ভাষায় আমি 'খারাপ' মানুষ। আমি মনে করি আমি খারাপ হলে আমার বিচার হওয়া উচিৎ। এজন্য আমি নিজের বিচার দাবি করে কলেজের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।
তিনি বলেন, পরে অধ্যক্ষ স্যার এসে আমাকে অনুরোধ করে অফিসে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, আমার অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে। তিনি একটা সমাধান দেবেন। আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। এজন্য লিখিত দেওয়ার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত জানাইনি।
সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষকের মধ্যে রুহুল কুদ্দুস টিটোর সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাফিজুর রহমান নিজে থেকে কলেজে নানা দায়িত্বে আসতে চান। গতকাল সোমবার কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া না হওয়ায় তিনি চটেছেন। এছাড়া টিআর নির্বাচনে তাঁকে ভোট না দিলে তিনি কয়েকজন শিক্ষককে 'দেখে নেবেন' বলে হুমকি দিয়েছেন।
রুহুল কুদ্দুস টিটো আরও বলেন, আমাদের কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষকের একটি ম্যাসেন্জার গ্রুপ আছে। ভোট চাওয়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে গ্রুপে আমি লিখেছিলাম, "হাফিজুর ভাই, আপনার চেয়ারা দিন দিন সুন্দর হচ্ছে কিন্তু আচরণ ভাল করা দরকার।" এর বাইরে তাকে নিয়ে খারাপ কোন মন্তব্য আমরা কোন শিক্ষক করিনি।
সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পেরে আমি নিজে তাকে কর্মসূচি ভাঙ্গিয়ে অফিসে ডেকে এনে আলোচনায় বসেছিলাম। তিনি দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। আমি প্রমাণাদিসহ তাকে অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছি।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ