প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 15, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 25, 2025 ইং
যশোরে নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই স্বামীর টানাটানি-হাতাহাতি, দুইজনই কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারীকে টানাটানি করছেন এক বৃদ্ধ ও যুবক। তারা ওই নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করছেন। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি। দুজনের টানাটানি ও হাতাহাতি দেখতে উৎসুক মানুষের জটলা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে যশোর শহরের চারখাম্বার মোড়ে ঘটেছে এ ঘটনা।
এরা হলো, ফরিদপুর কানাইপুর থানার ভাটি কানাইপুর এলাকার বিকাশ অধিকারী ও তার স্ত্রী সীমা অধিকারী এবং সদরের শোভারামপুর এলাকার মৃত অবনী মোহন কুন্ডুর ছেলে পলাশ কুমার কুন্ডু।
পরে স্থানীয়রা পুলিশ খবর দিলে তিন জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। আর সেখানেই শুরু হয় চরম উত্তেজনা। থানা চত্বরেই তারা কয়েক দফা নিজেদের মধ্যে শুরু করেন টানাটানি-হাতাহাতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঐ তিনজনকেই আটক করে হেফাজতে নেয়। পরে আটক বিকাশ অধিকারী ও পলাশকে পুলিশ ১৫১ ধারায় (নিরাপদ হেফাজত) আদালতে সোপর্দ করেছে। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
বিকাশ অধিকারী জানিয়েছেন, তার ৩৬ বছরের সংসার সীমা অধিকারীর সাথে। তার শ^শুর বাড়ি বর্তমানে ভারতে। দুই মাস আগে তার স্ত্রী সীমা ভারতে পিতার বাড়ি বেড়াতে যান। কিছুদিন পর বিকাশ অধিকারীও বেড়াতে গিয়েছিলেন শ^শুর বাড়ি। ভারত থেকে একসাথে ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু বাড়ির ভাড়াটিয়াদের পানির সমস্যার জন্য তিনি সীমাকে রেখে দুইদিন আগে দেশে ফিরে আসেন। সোমবার শ^শুর বাড়ি থেকে বিকাশ অধিকারীকে ফোনে জানানো হয়, সীমা দেশের উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছে। বিকাশ মোবাইলে স্ত্রীর সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে বিকাশ অধিকারী সোমবার বিকেলে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে গিয়ে সীমার দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হন। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেলে সীমা অধিকারী ও পলাশ কুন্ডুকে একসাথে খুজে পান তিনি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পলাশকে স্থানীয় লোকজন প্রতারক হিসেবে চেনে। তার দুইটি স্ত্রী আছে। আমার স্ত্রীর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। সীমা ভারত গেছে জানতে পেরে পলাশও ভারতে যায়। আমি আগে দেশে ফেরার সুযোগে প্রতারক পলাশ আমার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে দেশে নিয়ে এসেছে এবং তারা বিয়ে করেছে বলে দাবি করছে। তবে এ দাবির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি পলাশ। তিনি সীমাকে যেকোনো মূল্যে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চান।
পলাশ কুন্ডু জানিয়েছে, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক। তারা দুজনে দেড় মাস আগে ভারতের তাঁরাপীঠ মন্দিরে বিয়ে করেছে। তবে বিয়ের আগে বিকশ অধিকারীকে বিচ্ছেদের ঘোষনা দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে পলাশ।
সীমা অধিকারী জানিয়েছে, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন।
এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় দীর্ঘক্ষণ তাদের সঙ্গে কথা বলেও কোন সিন্ধান্তে পৌঁছানে যায়ানি। অবশেষে বিকাশ ও পলাশকে ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সীমাকে তার নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ