প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 15, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 4, 2025 ইং
সীমান্তের শূন্যরেখায় দাড়িয়ে বাবার মরদেহ দেখে বাংলাদেশি মেয়ের অশ্রুসিক্ত বিদায়

বেনাপোল প্রতিনিধি : সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে বাবার মরদেহ দেখে অশ্রুসিক্ত হলো বাংলাদেশি মেয়ে মিতু মন্ডল। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার বাশঘাটা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার মন্ডল বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। মৃত্যুর খবর বাংলাদেশে থাকা তার মেয়ে মিতু মন্ডলের কানে পৌঁছতেই বুকভরা কান্না আঁকড়ে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বাবাকে আর কখনও স্পর্শ করা যাবে না, তবে শেষবারের মতো অন্তত একনজর বাবার মৃত মুখখানি দেখবো- এমন আকুতি নিয়ে তিনি যশোর ৪৯ বিজিবির কাছে আবেদন জানান।
চারপাশে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, দু’দেশের বিজিবি-বিএসএফ’র অস্ত্রধারী প্রহরা আর কঠোর নিয়মকানুন। তবু সেই কঠোরতার দেয়াল ভেঙে জায়গা করে নিল একখন্ড মানবিকতা।
বুধবার (১ অক্টোবর ২০২৫) দুপরে যশোর ব্যাটালিয়ন ৪৯ বিজিবি ও ভারতের ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার ধান্যখোলা সীমান্ত মেইন পিলার ২৫/৬-এস এর নিকটে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
সীমান্ত পেরিয়ে না যেতে পারলেও শূন্যরেখায় শেষবারের মতো প্রিয়জনের মরদেহ দেখার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশি স্বজনরা। কাঁটাতারের ওপার থেকে বাবার মরদেহ দেখে অশ্রুসিক্ত হলেন বাংলাদেশি মেয়ে মিতু মন্ডল। বাবাকে ছুঁতে না পারলেও চোখের অশ্রুতে শেষ বিদায় জানাতে পেরেছেন তিনি। দুই দেশের কড়া প্রহরায় ঘেরা কাঁটাতারের বেড়ার আড়ালেও মিললো মানবিকতার জয়। পরে মরদেহ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় দাফনের জন্য, আর বাংলাদেশি স্বজনরা অশ্রুসিক্ত নয়নে ফিরে যান নিজ বাড়িতে।
বাংলাদেশি মেয়ে মিতু মন্ডল (৩৯) যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ী গ্রামের বাবলু মন্ডলের স্ত্রী।
এঘটনায় স্থানীয়রা বলেছেন, যশোরের শার্শা সীমান্তে এক আবেগঘন দৃশ্যের জন্ম দিল দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ। স্থানীয়দের মতে, এই ঘটনা সীমান্তে মানবিকতা ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন- “মানবিক বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সবসময় আন্তরিক। মৃত্যুর পরও প্রিয়জনকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ করে দেওয়া আমাদের দ্বিপাক্ষিক সৌহার্দ্যের প্রতীক।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ