প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 15, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 14, 2025 ইং
ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর ১৭ অক্টোবর, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্যের ঘাটতি

স্বপ্নভূমি ডেস্ক : ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষরের চূড়ান্ত দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক দলিলে স্বাক্ষর করবেন ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা। এই উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দলগুলোর কাছে সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য পাঠাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশন সূত্র অনুযায়ী, জুলাই সনদের চূড়ান্ত সংস্করণে মূলত কিছু ভাষাগত সংশোধন আনা হয়েছে, কিন্তু এতে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকছে না। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সুপারিশগুলো আলাদাভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
বাস্তবায়ন নিয়ে মতপার্থক্য, তাই বিলম্ব
মূলত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় জুলাই মাসে এই সনদ স্বাক্ষরের পরিকল্পনা বিলম্বিত হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হলেও, সনদটি গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়নের সময়, পদ্ধতি ও কাঠামো নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ কিছু দলের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। এই কারণে কমিশন বিশেষজ্ঞ মতামত ও রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত একত্র করে সরকারের কাছে একটি বাস্তবায়ন প্রস্তাবনা দেবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই প্রসঙ্গে বলেন, দলগুলো যে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, সেটির ভিত্তিতেই স্বাক্ষর করবে। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল— এটি আগে স্বাক্ষর করা উচিত।
৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব বহাল, ৪(ক) নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
জুলাই সনদে পূর্বের মতোই ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব থাকছে। তবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(ক) (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি প্রদর্শনের বিধান) বাতিলের বিষয়ে প্রায় সব দলের পক্ষ থেকে মতামত আসলেও, এটি সনদে যুক্ত করা হচ্ছে না।
কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেহেতু অধিকাংশ দলই এই অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পক্ষে, তাই পরবর্তী সংসদ ক্ষমতায় এলে তারাই এটি বাতিল করবে। নতুন প্রস্তাব যুক্ত না করার বিষয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজও একমত হয়ে বলেছেন, "এই সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সংসদ।"
স্মরণীয় করে রাখার প্রস্তুতি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, সনদের একটি প্রধান কপিতে তিনটি অংশ থাকবে— ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংস্কার প্রস্তাবের তালিকা এবং একটি অঙ্গীকারনামা। ৩০টি রাজনৈতিক দলের জন্য পৃথক অঙ্গীকারনামার কপিও থাকবে।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যেখানে প্রায় তিন হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে সনদ স্বাক্ষর শেষে দ্বিতীয় পর্বে প্রজেকশন ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়নের পটভূমি ভিডিও আকারে প্রদর্শন করা হবে। উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই অনুষ্ঠানকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বড় পরিবর্তনের সূচনা উল্লেখ করে এটিকে অংশগ্রহণকারীদের জীবনের এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা করে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বপ্নভূমি নিউজ