বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত মহেশপুর উপজেলা কমিটিকে কেন্দ্র করে সংগঠনের ভেতরে শুরু হয়েছে বিভক্তি ও বিতর্ক। কমিটিকে ঘিরে একাংশের আপত্তির প্রেক্ষিতে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে সংগঠনের নেতারা।
এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মহেশপুর উপজেলা ডাকবাংলা মিলনায়তনে প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হামিদুর রহমান রানা, সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক জামিল হাসান, মোকলেসুর রহমান ও সাব্বির হোসেনসহ আরও অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক হামিদুর রহমান রানা বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এসব ষড়যন্ত্র করছে।”
তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে পুকুর খনন, জিআরের চাল বাণিজ্য, বালু ব্যবসা ও গরুর হাট থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওঠে— যা তিনি সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
পুকুর খনন প্রসঙ্গে রানা বলেন, “পান্তাপাড়া ইউনিয়নের কুরবান গাজীর পুকুর নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের যোগাযোগ বা সম্পৃক্ততা নেই।”
জিআরের চাল বিতরণ বিষয়ে তিনি জানান, “রামচন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ‘টি আর-কাবিটা’ প্রকল্পের আওতায় রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে। সেখানে কোনো ধরনের বাণিজ্যের প্রশ্নই ওঠে না।”
বালু ব্যবসা প্রসঙ্গে রানা বলেন, “৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় যে বালু জব্দ ও নিলাম হয়, তা টেন্ডারপ্রাপ্ত ব্যক্তি শামীম খানের দায়িত্বে ছিল। আমার সঙ্গে ওই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।”
পুরাপাড়া গরুর হাটে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি ওই হাট পরিচালনায় যুক্ত নই। স্থানীয়ভাবে আঃ কাদের মেম্বার, মোঃ শাহীন মেম্বারসহ আরও একজন দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি প্রমাণের জন্য আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।”
সংগঠনের নেতারা আরও জানান, গত ৩ জুলাই শুক্রবার একটি পক্ষ নবগঠিত কমিটিকে ‘বিতর্কিত নেতৃত্ব’ আখ্যা দিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। তারা এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অবৈধ সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন।
বক্তারা বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক। আমরা এইসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।”
এ ঘটনায় সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহেশপুরে ছাত্র রাজনীতির পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।