স্টাফ রিপোর্টার: যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে আলোচিত টিকটকার ইয়াসমিন আক্তার মাহীর (২১) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২১ জুলাই) মধ্যরাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। নিহত মাহীর বাড়ি যশোরের বেনাপোল উপজেলার সাদীপুর গ্রামে।
মৃত্যুর আগে মাহী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও আপলোড করেন, যা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে একটি ওড়না ঝুলছে, যার ক্যাপশনে লেখা: “ভালোবাসা বলতে কিছুই হয় না, শুধুই ব্যর্থতা।” ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ওই রাতে মাহীর কক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে সকালে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মাহীকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
মাহী সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক ও টিকটকে নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতেন এবং তরুণদের মধ্যে তার একটি জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছিল। মৃত্যুর আগমুহূর্তে পোস্ট করা ভিডিওটি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা।
তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছেন, মাহীর সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, যা পরিবার মেনে নেয়নি। এমনকি সম্প্রতি তার অন্যত্র বিয়েও হয়ে গেছে বলে দাবি একটি সূত্রের। যদিও এসব তথ্য এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মাহীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, “মাহীর মৃত্যুকে আপাতত আত্মহত্যা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। একটি অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হয়েছে এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের মতে, মাহীর মৃত্যুতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য ও পারিবারিক চাপের দিকটি বিবেচনায় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা। বিষয়টি এখন সামাজিকভাবেও আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।