
মনিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুরে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাঁচা রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েছেন এক ইউপি সদস্য। পরে বাধার মুখে তিনি রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে শ্রমিক তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন। আজ রোববার সকালে উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের ইত্যা মোল্লাপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রকল্পের সভাপতি আনিছুর রহমানের দাবি, প্রকল্পের বরাদ্দের প্রথম কিস্তির টাকার মধ্যে ৩৭ শতাংশ পিআইও অফিস কেটে রেখেছে। লস সামলাতে আমি দুই নম্বর ইট দিয়ে কাজ করাচ্ছি।
সরেজমিন জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের তৃতীয় কিস্তিতে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দে কাশিমনগর ইউনিয়নের ইত্যা মোল্লাপাড়ায় মাটির রাস্তা সংস্কারের কাজ পান স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান। ১০ হাজার ইট দিয়ে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে রাস্তা খুঁড়ে বালু ছিটিয়ে আজ রোববার সকালে রাস্তায় ইটের সলিং বসানোর কাজ শুরু করার আনিছুর রহমান। রাস্তায় কয়েক ফুট ইটের সলিং বসানোর পর পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে নিম্নমানের ইট দেখে কাজ বন্ধ করে দেন।
ইত্যা মোল্লাপাড়ার কাঠ ব্যবসায়ী বাবু বলেন, এক নম্বর ইট দিয়ে রাস্তা করার কথা। মেম্বর যে ইট রাস্তায় দেচ্ছে তার কোন মান নেই। আমরা এক নম্বর ইট ছাড়া রাস্তা করতে দেব না। এজন্য কাজ বন্ধ করে দিছি।
ন্থানীয়রা বলেন, এই রাস্তা দিয়ে মাঠের সব ফসল আমরা বাড়ি তুলি। ঘনবসতি হওয়ায় রাস্তায় চাপ খুব। বৃষ্টি হলে রাস্তা কাদায় ভরে যায়। বহু কষ্টের পর আমরা রাস্তা পাইছি। এখন নিম্নমানের ইটে কাজ করতে দেব না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটের সলিং বসানোর আগে রাস্তায় বালু দেওয়ার কথা। মাটি মিশ্রিত বালু দেওয়ায় খুঁড়ে রাখা অংশে কাদা পানি জমেছে।
রাস্তায় ইটের সলিং বসানো কাজের শ্রমিক সরদার ইসমাইল হোসেন বলেন, সব দুই ও তিন নম্বর ইট। এক নম্বর ইট নেই। আমরা ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে কাজ করতে এসেছি।
প্রকল্পের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকায় ৫২০ ফুট রাস্তার জন্য ইটের সলিং বরাদ্দ হয়েছে। দুই কিস্তিতে ব্যাংক থেকে টাকা ওঠে। প্রথম কিস্তিতে অর্ধেক টাকা তুলে কাজ করতে হয়। কাজ শেষে বাকি টাকা ওঠে।
ইউপি সদস্য আরও বলেন, আমি প্রথম কিস্তিতে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা তুলিছি। তারমধ্যি পিআইও অফিস ৫৮ হাজার টাকা কেটে নেছে। আমি ৯৮ হাজার টাকা হাতে পাইছি।
"আমাকে পিআইও অফিস বলেছে রাস্তা করবেন ৪০০ ফুট। আমরা রাস্তা কমিয়ে দিয়েছি। আর না হয় আপনি বাঁচবেন না।"
মেম্বর আনিছুর বলেন, আমি দুই নম্বর ইট কিনে রাস্তা করাচ্ছিলাম। সব জায়গায় দুই নম্বর ইটে রাস্তা হয়। এক নম্বর ইট কোথাও দেয় না। এখন লোকজন কাজে বাধা দেছে। আমি ইট তুলে নিয়ে যাব।
মনিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইফুল ইসলাম বলেন, মেম্বর আনিছুরের কাছ থেকে কেউ টাকা কেটে রাখেনি। তাকে এক নম্বর ইট দিয়েই রাস্তা করতে হবে। আমি বিষয়টা খোঁজ নিচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :