• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

সুখ ফেরাতে ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম, কফিন হয়ে ফিরবে ভাবিনি—কান্নায় ভেঙে পড়লেন রনির মা


FavIcon
সাইফুল্লাহ খালিদ
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 5, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

বেনাপোল প্রতিনিধি: পরিবারের অভাব ঘোচাতে, মুখে একটু হাসি ফোটাতে ঘর ছেড়েছিল রনি। মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিল নতুন জীবনের আশায়। কিন্তু দেশের মাটিতে ফিরছে না সে নিজের পায়ে—ফিরছে কফিনে মোড়া নিথর দেহ হয়ে। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে মালয়েশিয়ার শ্রীরামবাং শহরে নির্মাণকাজে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় শার্শার যুবক রনি।

রনি যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ি বেলতলা গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহমুদ সরদারের ছেলে।

শনিবার সকালে বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১০টার দিকে মালয়েশিয়ার শ্রীরামবাং শহরের একটি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করছিলেন রনি। ভবনের ওপর থেকে ভারী একটি ক্রেনের চেইন ছিঁড়ে তার ওপর পড়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সহকর্মীরা মোবাইল ফোনে দেশে ফোন করে খবর জানানোর পর মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে রনির পরিবার।

ছেলের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর ভেঙে পড়েছেন রনির মা। চোখের জল মুছতে মুছতে তিনি বলেন,"অভাবের সংসারে একটু শান্তি আনতে আমার রনি মালয়েশিয়া গিয়েছিল। কত স্বপ্ন, কত আশা ছিল আমাদের! কিন্তু এখন সেই স্বপ্নই আমার বুক ভেঙে দিয়ে গেল। ফোনে জানলাম, আমার বুকের ধন আর নেই—একটা ক্রেন আমার ছেলেকে কেড়ে নিয়েছে। আমি সরকারের কাছে শুধু একটাই মিনতি করি—আমার ছেলের নিথর দেহটা যেন একবার চোখে দেখতে পাই। ও তো শুধু স্বপ্ন দেখতে গিয়েছিল, কফিন হয়ে ফিরবে তা কখনও ভাবিনি।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আড়াই বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন রনি। সেখানে একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। শুরু থেকেই নিয়মিত কষ্ট করতেন সংসারের হাল ধরার জন্য। কিন্তু সেই পরিশ্রমেরই মাশুল দিতে হলো তাকে জীবন দিয়ে।

কায়বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন জানান, রনি দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় কাজ করছিল। আজ সকালে তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। স্থানীয় প্রবাসীরা এবং পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দ্রুত দেশে ফেরানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাজী নাজিম হাসান বলেন, রনির মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।