• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

ঐতিহ্যবাহী চৌগাছা হাটের ভবিষ্যৎ সংকটে, মডেল মসজিদ নির্মাণে স্থান পরিবর্তনের দাবি


FavIcon
সাইফুল্লাহ খালিদ
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 5, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

চৌগাছা প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাঁচামাল হাটের মাঝখানে মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন হাজারো ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবার। কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা মসজিদটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদ অন্য কোথাও নির্মাণ করা গেলেও, এই ঐতিহাসিক হাট স্থানান্তরিত হলে অন্তত ৩ হাজার মানুষ জীবিকা সংকটে পড়বে।
ব্যবসায়ী মতবেল বিশ্বাস বলেন, চৌগাছা কাঁচামাল হাট শুধু একটি বাজার নয়, এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। বহু বছর ধরে এটি স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক। কিন্তু এখন এই হাটের ঠিক মাঝখানেই মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 
তিনি বলেন, বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে জায়গাটি মসজিদের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে ১১০টি কাঁচামালের আড়ৎ রয়েছে। এছাড়াও আরও প্রায় ১৫০ জন সহযোগী ব্যবসায়ী এখানে কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি এই স্থানে মসজিদ নির্মিত হয়, তবে অন্তত ২০০ পরিবার চরম আর্থিক দুর্দশার শিকার হবে।
চৌগাছা কাঁচামাল হাটের ৫৮ জন ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান, এটি অবশ্যই নির্মাণ হোক। কিন্তু এর জন্য কেন আমাদের শতবর্ষী হাটের বুকে আঘাত হানা হবে? মসজিদ অন্য যেকোনো স্থানে নির্মাণ করা সম্ভব, কিন্তু এই হাট যদি স্থানান্তরিত হয়, তবে অন্তত ৩ হাজার মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। আমি তিন মাস ধরে ইজারা আদায় করছি। যদি এই স্থানে মসজিদ হয়, তাহলে আমার বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হবে। একটি মহল আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে এবং এর মাধ্যমে এই সর্ববৃহৎ কাঁচাবাজারকে ধ্বংস করার পায়তারা চলছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এই স্থানেই মসজিদ নির্মাণ করতে হয়, তবে ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এ বিষয়ে চৌগাছা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান জানান, গত ২৯ জুন চৌগাছা মডেল মসজিদের অনুমোদন হয়েছে। তিনি ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঐতিহ্যবাহী এই হাটকে বাঁচাতে এবং হাজার হাজার মানুষের জীবিকা রক্ষার জন্য প্রশাসনকে অবশ্যই বিকল্প কোনো স্থানে মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।