যে কারণে রাশিয়ার ওপর বড় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারছেন না ট্রাম্প
সাইফুল্লাহ খালিদ
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 16, 2025 ইং
স্বপ্নভূমি ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ন্যাটো দেশগুলোর কারণেই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারছে না। তিনি বলেন, ন্যাটো দেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলেই তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যালে' এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, "আমি প্রস্তুত। আপনারা যখন বলবেন, তখনই শুরু করব।" তিনি ন্যাটো সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা ‘অবিশ্বাস্য’। এই তেল কেনা বন্ধ করা এবং চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে। তার মতে, এর ফলে চীনের ওপর রাশিয়ার ‘শক্ত নিয়ন্ত্রণ’ দুর্বল হবে।
ইউরোপের জ্বালানি নির্ভরতা এবং ট্রাম্পের প্রস্তাব
রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো ধীরে ধীরে রুশ জ্বালানির ওপর তাদের নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে। ২০২২ সালে ইইউ দেশগুলো যেখানে প্রায় ৪৫ শতাংশ গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করত, সেখানে এ বছর তা প্রায় ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে ট্রাম্পের মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তিনি এই কমানোকে যথেষ্ট মনে করছেন না।
জেলেনস্কির আহ্বান
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও বারবার ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা পুরোপুরি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করা সম্ভব।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিশ্রুতি: গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের মতে, ২০২২ সালের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানিতে প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে, যা ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য মস্কোকে অর্থ জুগিয়েছে। ইইউ ২০২৮ সালের মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি কেনা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে চায়।
ন্যাটোর উত্তেজনা এবং তুরস্কের ভূমিকা
ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই ট্রাম্পের এই বার্তা এসেছে। সম্প্রতি, এক ডজনের বেশি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এই ঘটনার পর ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং জার্মানি ন্যাটোর নতুন মিশনে যোগ দিয়েছে এবং জোটের পূর্ব সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে।
ট্রাম্পের বার্তাটি সরাসরি ইইউর বদলে ন্যাটোর উদ্দেশে দেওয়া হয়েছে, কারণ ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল ক্রেতা এবং মস্কোর সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তুরস্ককে রাজি করানোই সবচেয়ে কঠিন কাজ হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :