• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা: বাণিজ্য উপদেষ্টা


FavIcon
Swapnobhumi
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৫
ছবির ক্যাপশন: ad728

স্বপ্নভূমি ডেস্ক:
ব্যবসায়ীরা যেভাবে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন, তার আইনগত ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আধা ঘণ্টা আগে তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখন ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দেড় কোটি লিটার ভোজ্যতেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ও এক কোটি লিটার রাইস ব্রান তেল কেনা হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার গতকাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে দামে ভোজ্যতেল কিনেছে, আজ বাজারে তার চেয়ে ২০ টাকা বেশি দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। তিনি এর যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।

বিষয়টি হলো, পূর্বঘোষণা ছাড়াই নীরবে ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এবার প্রতি লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা এত ক্ষমতাধর হয়ে গেল কীভাবে যে সরকারকে পাশ কাটিয়ে তারা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের করুন। আমরা আলোচনা করেছি, পদক্ষেপ নিচ্ছি। এটা তো বাজারে গিয়ে তলোয়ার নিয়ে যুদ্ধ করার বিষয় নয়।’

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ থাকলে আলোচনা করা যাবে। সরকার সরবরাহ ব্যবস্থা গতিশীল রাখতে চায়। সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত করতে চাই না আমরা।’

ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দাম বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় কিংবা ট্যারিফ কমিশনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা তাঁদের বক্তব্য। তাঁদের এ কথা আমরা মানি না।’

রোজার প্রস্তুতির বিষয় জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ভালো প্রস্তুতি আছে। আমরা দেখেছি, আমদানির পর্যায়ে যে পরিমাণ ঋণপত্র খোলা প্রয়োজন, গতবার যে পরিমাণ খোলা হয়েছে, এবার তার চেয়েও বেশি খোলা হচ্ছে। তাই সরবরাহ বিঘ্নিত হবে না।’

ইতিমধ্যে বাজারে কিছু জিনিসের দাম কমেছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, চিনির দাম কমছে। ছোলার দামও কমবে। এ ছাড়া ডাল ও ডিমের দাম কমেছে। আরও কিছু জিনিসের দামও কমেছে। সরকার যেকোনো বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান চায়।

সরকারি ব্যবস্থার অপেক্ষায় ক্যাব

এদিকে আজ বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের খসড়া নিয়ে বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি সাবেক সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এ আইন অনুযায়ী কিছু পণ্যের মূল্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করে দেয়। মূল্য নির্ধারণ কীভাবে করা হবে, সেটার একটা সূত্র আছে। হঠাৎ করে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার সমিতি যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ না করে তেলের দাম বাড়ায়, আমি বলব, তা আইনের ব্যত্যয়।’

ক্যাব সভাপতি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধি ভোক্তার অধিকারের প্রশ্ন। বাণিজ্য উপদেষ্টা যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন, আমরা তা দেখার অপেক্ষায় আছি।’

পরিশোধন কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার মতো বিধানও আইনে আছে জানিয়ে ক্যাব সভাপতি বলেন, ‘প্রতিযোগিতা আইন আছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন আছে। যদি কেউ মজুত করে দাম বাড়ায়, সেখানে বিশেষ আইন প্রয়োগের ব্যবস্থাও আছে। আমরা সেই আইনের প্রয়োগ দেখতে চাই।’

ক্যাবের সভাপতি আরও বলেন, ইদানীং তদারকি বিষয়টা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতি ও আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যও কিন্তু বড় বিষয়। ভোক্তাদের স্বার্থে বাজার তদারকি জোরদার করা উচিত।