
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী গ্রামে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক তরুণী, তার মা ও শিশুভাইয়ের ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছে এক যুবক। এতে গুরুতর দগ্ধ হয়েছে ওই পরিবারের তিনজন। তাদের মধ্যে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাত ৮টার পর। পুলিশ ও র্যাব জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক জসিমকে (২৫) গ্রেপ্তারে যৌথ অভিযান চলছে।
দগ্ধরা হলেন—গদখালী গ্রামের জামাত হোসেনের মেয়ে রিপা খাতুন, তার ছোট ভাই ইয়ানূর (৭) ও মা রাহেলা বেগম। এসিডে শিশুটির মুখ ও শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত জসিম মঠবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এবং গদখালীতে নির্মাণকাজে নিয়োজিত ছিলেন। সেই সূত্রে রিপার সঙ্গে তার পরিচয় গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে জসিম রিপাকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়, কিন্তু বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে বৃহস্পতিবার রাতে রিপাদের ঘরের জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
আহত রিপা বলেন, “অনেক দিন ধরে জসিম আমাকে বিরক্ত করে আসছিল। আমি পাত্তা দেইনি। আর এতেই সে ক্ষোভে এমন ভয়ানক কাজ করল। আমার ভাইয়ের মুখ ঝলসে গেছে, এটা আমি সহ্য করতে পারছি না।”
ঝিকরগাছা থানার ওসি ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই পুলিশ, ডিবি ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, “এসিড হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। দ্রুত আসামিকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা কাজ করছি।”
র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. রাসেল বলেন, “আমরা জসিমকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। আশা করছি দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে।”
আহত পরিবারের সদস্যরা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, “আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জসিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এমন ঘটনা আবার ঘটতে পারে।”
ঘটনার পর গদখালী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিবেশীরা এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, “নারীর ওপর সহিংসতা রুখতে কঠোর শাস্তিই একমাত্র পথ।”
আপনার মতামত লিখুন :