
যশোরের ঝিকরগাছায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সংঘর্ষে একজনের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুইজন। আহতদের মধ্যে আরাফাত হোসেন লাল্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) রাত ৮টার পর উপজেলার চান্দেরপোল মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নীর অনুসারী গোন্নানগর গ্রামের আরাফাত লাল্টু ও রুবেলদের সঙ্গে সাবেক আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপুর অনুসারী মিজান, সোহাগ ডাক্তার, রশিদ প্রমুখের দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল।
রোববার রাতে মিজান গং রুবেলকে ধরে নিয়ে এলে খবর পেয়ে লাল্টু ঘটনাস্থলে যান। তার সঙ্গে ছিলেন বাবা মতলেব হোসেন ও ফুফাতো ভাই মামুন। এ সময় ওঁত পেতে থাকা মিজান, সোহাগ ডাক্তার, রশিদ ও রেজা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে লাল্টুর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে তার ডান হাতের কব্জির অর্ধেক কেটে যায় এবং মাথা ও ঘাড়ে গুরুতর জখম হয়।
লাল্টুর দুলাভাই শাহাজাহান জানান, লাল্টুকে রক্ষা করতে গিয়ে তার বাবা ও মামুনও হামলার শিকার হন। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে লাল্টুকে ঢাকায় পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কব্জিটি সম্পূর্ণ কেটে ফেলতে হতে পারে।
অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়দের ধাওয়ায় মিজান পক্ষের রশিদ আহত হন। পরে তিনি কোনোমতে পালিয়ে গিয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী বলেন, “মিজান, সোহাগ, রশিদ, রেজাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্টের পর তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের অনেকেই দল থেকে বহিষ্কৃত। তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াতেই লাল্টুর ওপর হামলা হয়।”
অন্য একটি সূত্র জানায়, উপজেলা বিএনপির সাম্প্রতিক নির্বাচনে মোর্তজা এলাহী টিপু সভাপতি পদে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দলীয় কোন্দল আরও তীব্র হয়।
ঘটনার বিষয়ে সাবেক আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপুর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঝিকরগাছা থানার ওসি নুর মোহাম্মদ গাজী বলেন, “ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অনলাইন জুয়াকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
আপনার মতামত লিখুন :