• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

দুর্গোৎসবের আমেজ নেই অভয়নগরের সেই মতুয়া সম্প্রদায়ের


FavIcon
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 30, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

অভয়নগর প্রতিনিধি : শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহরমশিয়াহাটী গ্রামের বাড়েধাপাড়ায় সেই মতুয়া সম্প্রদায়ের মাঝে নেই উৎসবের আমেজ। প্রায় ৪ মাস ধরে জলাবদ্ধ, কাটেনি আতঙ্ক,  নেই নতুন পোষাক কেনার টাকা, মাছ শিকার ও শাপলা বিক্রি করে চলছে তাদের সংসার। 

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, সুন্দলী ইউনিয়নের ডহরমশিয়াহাটী গ্রামের চারিদিকে পানি আর পানি। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়েধাপাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর যাতায়াতের একমাত্র বাহন তালের ডোঙা। বসতঘরের বারান্দা থেকে রাস্তা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। সন্ত্রাসীদের ভয়ে এখনও অনেক পরিবারের পুরুষ সদস্যরা রয়েছেন আত্মগোপনে। অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরা জলাবদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। দুর্গাপূজা শুরু হলেও তাদের চোখেমুখে রয়েছে আতঙ্কের ছাপ। নেই উৎসবের কোনো আমেজ। 

সংবাদকর্মী দেখে বাড়েধাপাড়ার প্রশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস বলেন, চলতি বছরের ২২মে নওয়াপাড়া পৌর কৃষকদলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের মুতয়া সম্প্রদায়ের ১৮টি বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আমাদের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, বছরের জন্য মজুদ খাবার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে আমরা পাশের গ্রামে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হলে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মধ্যে ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। অন্যান্যরা আটক আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। বর্তমানে ওই মামলা চালানোর মত সামর্থ্য আমাদের নেই। 


মৃত পাগল চান বিশ্বাসের স্ত্রী সবিতা বিশ্বাস বলেন, দুর্গাপূজা শুরু হলেও উৎসব করার মত অবস্থায় আমাদের নেই। কারণ যে মৎস্যঘের নিয়ে দ্বন্দ্বে একজন খুন হলেন, সেই মৎস্যঘেরের মাছ লুট হয়েছে। এখন দিনের খাবার জোগাতে কষ্ট হয়। বাড়ির বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য নতুন পোষাক কেনার টাকা নেই। শিকার করা মাছ বাজারে বিক্রি করে চাল কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিন শাপলা দিয়ে ভাত খেতে হয়। খুবই কষ্টে জীবন চলছে। এর মধ্যে উৎসব করার ইচ্ছ বা সামর্থ্য কিছুই আমাদের নেই। 

মৃত গোপাল বিশ্বাসের ছেলে বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন ঘর নির্মাণসহ সংস্কার ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে চাল ও নগদ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে কেউ খবর রাখে না। আমরা মতুয়া সম্প্রদায়েরর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছি।  

সুন্দলী ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারি বেসরকারিভাবে কিছু সহযোগিতা পেয়েছিল। তবে দুর্গোৎসবের ব্যাপারে তাদের জন্য কোনো সহযোগিতা আসেনি। তারপরও পরিষদের উদ্যোগে তাদের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মতুয়া সম্প্রদায়ের অসহায় ওই পরিবারগুলোর জন্য পুজার মধ্যেই কিছু উপহার দেওয়া চেষ্টা করবো।’