জাতীয় সংসদ নির্বাচন: দুই শতাধিক আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত বিএনপির, অক্টোবরেই ঘোষণা
S Hasan
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 7, 2025 ইং
স্বপ্নভূমি ডেস্ক: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী রণকৌশল সাজাতে শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। জানা গেছে, দলটি ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আসনের জন্য আসনভিত্তিক একক প্রার্থী অনেকটা চূড়ান্ত করে ফেলেছে। এই মনোনীত প্রার্থীদেরকে চলতি (অক্টোবর) মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগে নামার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
একক প্রার্থীর পক্ষে না থাকলে বহিষ্কার
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ নিশ্চিত করেছেন, একাধিক প্রার্থীর মধ্যে আসনভিত্তিক বিরোধ নিরসনে দীর্ঘ সিরিজ বৈঠক শেষে এই একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের খড়্গ নেমে আসবে।" অর্থাৎ, এবার বিদ্রোহী বা নিষ্ক্রিয় থাকার কোনো সুযোগ দেবে না দল।
মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সতর্কতা ও নতুনত্ব
২০১৮ সালের নির্বাচনে এক আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে সমালোচিত হয়েছিল বিএনপি। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার দলটি শুরু থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
বাছাইয়ের মাপকাঠি: সালাহউদ্দিন আহমদের ভাষ্যমতে, এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে দক্ষ সংগঠক, আন্দোলনে ভূমিকা, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা ও জনগণের কাছে জনপ্রিয়তা বিবেচনা করে। তিনি আরও জানান, এবারের তালিকায় প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে চমক থাকবে এবং তারুণ্যের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
নেতৃত্বের ভূমিকা: দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে জেলা-উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। জরিপ ও সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার মাধ্যমে ২শ’ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
কৌশলী অবস্থান: প্রতিটি আসনে গড়ে ৪ জন প্রার্থী মাঠে থাকার কারণে কোথাও কোথাও নিজেদের মধ্যেই বিরোধ তৈরি হচ্ছে। তবে যেসব আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে বিএনপি তফসিল পর্যন্ত কৌশলগতভাবে অপেক্ষা করবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সময় নিয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, "যার সাথে গণসম্পৃক্ততা আছে, তাকে বাছাই করে নেওয়া দূরহ ব্যাপার। হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে দেওয়া মানে সংগঠন শক্তিশালী না।" তার মতে, বিএনপি যেহেতু একটি গণভিত্তিক দল, তাই পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই প্রয়োজন।
শরিকদের জন্য ৫০ আসন উন্মুক্ত, জামায়াত এখন প্রতিপক্ষ
এদিকে, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের সঙ্গেও আসন ভাগাভাগির বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করতে চায় বিএনপি। মিত্রদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। নীতিগতভাবে সর্বোচ্চ ৫০টি আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও এখনই তা প্রকাশ করতে চায় না দলটি। এই অর্ধশত আসন উন্মুক্ত রেখে সমঝোতার জন্য তফসিল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি।
অন্যদিকে, একসময়ের ঘনিষ্ঠ জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী এখন বিএনপির প্রবল প্রতিপক্ষ। জামায়াতও ইতোমধ্যে তাদের আসনভিত্তিক প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে গণসংযোগে নেমে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :