সদর হাসপাতালে ছিল না অ্যান্টিভেনম, ফেরত সাপেকাটা রোগীর চিকিৎসা হলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 7, 2025 ইং
মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে সাপে কাটা এক রোগীকে যশোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় রোববার রাতে। সেখানে ভ্যাকসিন না থাকায় রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। পরে রোগীকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে এনে চিকিৎসা দেওয়ার পর রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
গতকাল রোববার রাতে সাড়ে সাতটার দিকে মনিরামপুরের পারখাজুরা গ্রামের শিউলি খাতুনকে (৩০) বিষাক্ত সাপে কামড় দেয়। সন্তানের স্কুল ব্যাগ সরাতে গেলে ব্যাগের নিচে থাকা জাত সাপ শিউলি খাতুনের বাম পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়। এরপর তার চিৎকার শুনে স্বজনেরা এসে সাপটিকে মেরে শিউলি খাতুনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
শিউলি খাতুনের বোন আয়েশা বেগম বলেন, শিউলির স্বামী হাফিজুর রহমান স্থানীয় বাজারের সাইকেল মিস্ত্রি। সন্ধ্যায় তিন সন্তানকে ঘরে বসে পড়াচ্ছিলেন শিউলি। পড়া শেষে বাচ্চাদের বইখাতা গুছিয়ে রাখার সময় কিছু একটা তার বাম পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়। দ্রুত সময়ে পা নিস্তেজ হয়ে আসলে সন্দেহ হয় শিউলি খাতুনের। পরে তিনি স্কুল ব্যাগ সরালে নিচে সাপ দেখে চিৎকার দেন। আশপাশের লোকজন চিৎকার শুনে এসে সাপটিকে মেরে ফেলেন।
আয়শা বেগম বলেন, আমরা প্রথমে রোগীকে স্থানীয় কবিরাজ বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে মন না মানায় সাপের ছবিসহ রোগীকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সাপের ছবি দেখারপর বিষাক্ত সাপ নিশ্চিত হয়ে শিউলির রক্ত পরীক্ষা করান চিকিৎসক। রক্তে বিষ নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসক জানান হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই। তারা রোগীকে খুলনায় নিতে বলেন। এরপর আমরা মনিরামপুর হাসপাতালে যোগাযোগ করে মনিরামপুর হাসপাতালে এনেছি। চিকিৎসা নেওয়ার পর আমার বোন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের আবাসিক চিকিৎসক অনুপ বসু বলেন, গতকাল রাতে শিউলি খাতুনের একজন স্বজন আমার সাথে যোগাযোগ করে বলেন, সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর অ্যান্টিভেনম না থাকায় সেখান থেকে তাদের রোগীকে খুলনায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম থাকার বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন তিনি। আমি তাকে অ্যান্টিভেনম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে রোগীকে মনিরামপুরে আনার পরামর্শ দিয়েছি।
ডা. অনুপ বলেন, এরপর রাত ১টার দিকে শিউলি খাতুনকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে ভর্তি করে আমরা অ্যান্টিভেনম দিয়েছি। এখন রোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি সুস্থ আছেন।
ডা. অনুপ বলছেন, একজন সাপে কাটা রোগীর ১০ ভায়াল ভ্যাকসিন লাগে। যার মূল্য ২৩ হাজার টাকা। মনিরামপুর হাসপাতালে ১০ ভায়াল ভ্যাকসিন মজুত ছিল। পরে ইউএনও নিশাত তামান্না পৌরসভার পক্ষ থেকে ২০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম সরবরাহ দিয়েছেন। আমাদের মজুত থাকা ভ্যাকসিন গতরাতে শিউলি খাতুনকে দেওয়া হয়েছে। এখনো ইউএনওর দেওয়া ভ্যাকসিন মজুত আছে; যা দুজন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :