অবশেষে শান্তি! ইসরাইলি অস্ত্রবিরতির পর শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন গাজাবাসী
S Hasan
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 12, 2025 ইং
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘদিনের সংঘাত আর রক্তপাতের পর অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে গাজার ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর গাজায় ইসরাইলি ড্রোন, যুদ্ধবিমান ও কামানের গর্জন থেমে গেছে, যার ফলে উপত্যকাজুড়ে এক ধরনের শান্তি ও নীরবতা নেমে এসেছে। বহু প্রতীক্ষিত এই বিরতিতে গাজাবাসী বহুদিন পর একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
গাজায় সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে গত সোমবার মিশরে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়। টানা তিনদিনের আলোচনার পর বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে দুই পক্ষ মার্কিন শান্তি পরিকল্পনার প্রথম দফা কার্যকরে একমত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের পক্ষ থেকে এই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধবিরতির খবর ঘোষণার পরও গাজায় বেশ কিছুক্ষণ হামলা চলে। ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজা সিটির পশ্চিমে বোমা হামলা চালায়, যার আঘাতে আল শাতি শরণার্থী শিবিরের অন্তত একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া, ইসরাইলি বাহিনী গাজা শহরের দক্ষিণে সাবরা পাড়ার কাছে বিস্ফোরক বোঝাই একটি সাঁজোয়া যানের বিস্ফোরণ ঘটায়। যদিও এসব হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এরপর গভীর রাতের দিকে হামলা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
আল জাজিরার গাজা সংবাদদাতা হানি মাহমুদ গভীর রাতের এই নীরবতা কাছ থেকে দেখেছেন। তিনি লিখেছেন, “গত রাত (মঙ্গলবার) এবং আগের দিনের তুলনায় বুধবারের রাতটি একেবারেই আলাদা। আমরা অনেক তাঁবুর এলাকা এবং উদ্বাস্তুদের আশ্রয়স্থানগুলোতে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলাম এবং আক্ষরিক অর্থেই আমরা রাস্তায় কোনো মানুষ দেখিনি। সবাই তাঁবুর ভেতরে ঘুমাচ্ছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, গত সপ্তাহগুলোতে ফিলিস্তিনিরা লাগাতার ড্রোন হামলা, যুদ্ধবিমান ও অবিরাম বোমাবর্ষণের কারণে সর্বদা সতর্ক থাকত, ঘুমের সুযোগ পেত না। কিন্তু আজ রাতের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন, উদ্বাস্তু আশ্রয়কেন্দ্রের সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
হানি মাহুমদ লিখেছেন, “আমার মনে হয়, আজ রাতটি একটি শান্ত রাত বুঝতে পেরেই তারা তার সুযোগ নিচ্ছে। আজ তাদের জাগিয়ে রাখার জন্য কোনো ড্রোন উড়ছে না। কোনো যুদ্ধবিমান নেই। কোনো ভারী কামান নেই। এবং যখন আমি এটা দেখলাম, তখন আমার মনে হলো, তাদের আসলেই ভালো ঘুমের দরকার।”
যুদ্ধবিরতি চুক্তি কতদিন স্থায়ী হয় এবং গাজাবাসী এই শান্তি কতদিন উপভোগ করতে পারেন, এখন সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের।
আপনার মতামত লিখুন :