• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রতিদিনই বাড়ছে চুরি-ছিনতাই, নিরাপত্তা কমিটি গঠন


FavIcon
Swapnobhumi
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৬
ছবির ক্যাপশন: ad728

মাসুদুর রহমান শেখ, শার্শা:
দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম শ্রেণীর কেপিআইভুক্ত বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ঘাটতি, যাত্রী হয়রানি ও চুরি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিরাপত্তা জোরদার ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকির লক্ষ্যে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নতুন নিরাপত্তা কমিটি গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) কে আহ্বায়ক এবং সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-১) কে সদস্য সচিব মনোনীত করে এ কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটিতে বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক)-১, সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক)-১, সহকারী প্রোগ্রামার, এপিবিএন ক্যাম্প ইনচার্জ, ফায়ার পরিদর্শক, আনসার ক্যাম্প প্লাটুন কমান্ডার(পিসি) ও বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তাকে সদস্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) ও উপ-সচিব মোঃ শামীম হোসেন। তিনি বলেন, “সিসিটিভি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা নজরদারি করি। কিন্তু বন্দর এলাকায় সব প্রশাসন একসাথে কাজ করলে বেনাপোলকে নিরাপত্তার চাদরে আরও শক্ত নিরাপত্তা বলয়ে আনা সম্ভব।
তিনি আরও জানান, চোরাকারবারি ও চেকপোস্ট এলাকায় চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধে টার্মিনালে ম্যাজিস্ট্রেট অফিস স্থাপন করা হয়েছে। যাতে দ্রুত বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে অপরাধীদের তাৎক্ষণিক সাজা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো যায়।
সভায় বক্তারা সিকিউরিটি গার্ডদের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- “বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সবচেয়ে দুর্বল অংশ সিকিউরিটি গার্ডরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে চুরি-ছিনতাই বন্ধ হবে না।
স্থানীয় বন্দর ব্যবহারকারী ও যাত্রীরা যাত্রীসেবা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান- বন্দরে সাধারণ শ্রমিকদের টয়লেট নেই, নামাজের নির্ধারিত জায়গা নেই, যাত্রীসেবার নামে আদায় করা ৬০ টাকা সেবা ফি’র কোনো ব্যবহার তারা পান না, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন প্রশাসনের দখলে থাকায় যাত্রীদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, “গরুর খাটালের মতো লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে ক্লান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়তে হয়। প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের টয়লেট পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় না। ফলে প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাইয়ের শিকার হতে হচ্ছে।
একাধিক সূত্র জানায়, বন্দর এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও প্রতারণার বিশাল সিন্ডিকেট সক্রিয়। বহু যাত্রী চলার পথে সর্বস্ব হারিয়েছেন, চিকিৎসার টাকা খুইয়ে কেউ কেউ এখানে মৃত্যুবরণও করেছেন।
আলোচনা সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়- এপিবিএন, আনসার ও বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং, নিয়মিত উপস্থিতি ও বায়োমেট্রিক হাজিরা পর্যালোচনা, বকশিশ/চাঁদা/মাসোয়ারা উত্তোলন বন্ধে সুপারিশ, অগ্নিকান্ড ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সভা করে নিরাপত্তা অগ্রগতি বন্দর পরিচালক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
সভায়, বেনাপোল বন্দর, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, জেলা পুলিশ, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থা, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি, হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।