• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

দক্ষিণাঞ্চলে আসছে বাণিজ্যিক গতি, অক্টোবরেই ভোমরা পাচ্ছে কমিশনারেট স্বীকৃতি


FavIcon
S Hasan
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 12, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশন চলতি অক্টোবর মাসেই ‘কাস্টমস কমিশনারেট’ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশিত হলেই ভোমরা শুল্ক স্টেশন আনুষ্ঠানিকভাবে কাস্টমস কমিশনারেট হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই স্বীকৃতি বাস্তবায়িত হলে এটি দক্ষিণাঞ্চলের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে এবং বন্দরের আর্থিক ও প্রশাসনিক গুরুত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ পাবে ভোমরা বন্দর, যা সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতেও সহায়ক হবে।

ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ১৫ এপ্রিল ১৬টি পণ্য নিয়ে এলসি স্টেশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে এই স্থলবন্দর। ২০১৩ সালে ওয়্যার হাউস নির্মাণের পর এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে উন্নীত করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গুড়ো দুধ ব্যতীত সকল পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়।

তবে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত অপ্রতুলতার কারণে এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছিল না। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১১শ’ কোটি টাকার একটি বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। “ভোমরা স্থলবন্দর সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন শীর্ষক” এই প্রকল্পের আওতায় ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে উন্নতমানের ওয়ার হাউজ, শেড, গাড়ি পার্কিং ইয়ার্ড, ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, আর্ন্তজাতিকমানের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এবং টেকসই সড়ক নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে চলমান।

ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ সম্পাদক আব্দুল গফুর সরদার জানান, ভোমরা বন্দরের উল্টো দিকে ভারতে ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটারের কম। এই কম দূরত্বের কারণে পণ্য পরিবহনে ফুয়েল সাশ্রয় হয় এবং সময় বাঁচে। ব্যবসায়ীরা খুব কম সময়ের মধ্যে ভোমরা বন্দর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পণ্য সরবরাহ করতে পারেন। এই সুবিধাগুলোই আমদানি-রপ্তানিকারকদের এই বন্দরের প্রতি বেশি আগ্রহী করে তুলছে। তিনি মনে করেন, কমিশনারেট স্বীকৃতি পেলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বহুলাংশে সম্প্রসারিত হবে।

ভোমরা কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, কাস্টমস ষ্টেশনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই কাস্টমস কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ২১ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই কমপ্লেক্সে সাততলা প্রশাসনিক ভবন, তিনতলা যাত্রী সেবা ও ব্যাগেজ স্ক্যানিং ভবন, অফিসার্স কোয়ার্টার, ডরমিটরি এবং কাস্টমস কমিশনারের বাস ভবন রয়েছে।

তিনি নিশ্চিত করেন যে, কমিশনারেট স্বীকৃতির জন্য কাগজপত্র ও বেতনভাতাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিতও হয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গেজেট প্রকাশ বাকি রয়েছে।

ভোমরা কাস্টমস সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা জানান, কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে কার্যক্রম বিলম্বিত হলেও, সকল বাধা অতিক্রম করে অক্টোবরেই স্বীকৃতি আসার সম্ভাবনা প্রবল।

রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান আরও বলেন, কমিশনারেট স্বীকৃতি এলে ভোমরা বন্দরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে। এটি দেশের রাজস্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে।