• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

গুলশান প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট


FavIcon
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭
ছবির ক্যাপশন: ad728

স্বপ্নভূমি ডেস্ক :
দুর্নীতির নতুন মোড়: শেখ হাসিনার পর এবার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করলো দুদক! গুলশানের প্লট 'অবৈধ হস্তান্তর' ও 'ঘুষের ফ্ল্যাট' নেওয়ার অভিযোগ।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর এবার তার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ রিজওয়ান সিদ্দিক এবং রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা সরদার মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার গুলশানে একটি প্লট 'অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা' করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে 'ঘুষ' হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) চার্জশিটের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন।

অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু
  • মামলা ও আসামি: গত ১৫ এপ্রিল দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ রাজউকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। অন্য আসামিরা হলেন রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সর্দার মোশারফ হোসেন।
  • চার্জশিট থেকে বাদ: এজাহারভুক্ত আসামি শাহ মো. খসরুজ্জামানের নাম থাকলেও এ সংক্রান্ত আপিল কেস বিচারাধীন থাকায় আপাতত তাকে বাদ দিয়ে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
  • প্লট হস্তান্তরের লঙ্ঘন: ১৯৬৩ সালে বরাদ্দপ্রাপ্ত গুলশানের প্লটটি (১ বিঘা ১৯ কাঠা ১৩ ছটাক) সরকারি ইজারা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ৯৯ বছরের মধ্যে হস্তান্তর বা বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল।
  • অবৈধ অনুমোদন: মামলা চলাকালীন এবং হস্তান্তর নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজউকের সংশ্লিষ্ট আইন উপদেষ্টারা ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে প্লটটি ভাগ করে ৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ ও হস্তান্তরের অনুমোদন দেন, যা ইজারার শর্তের লঙ্ঘন। কোম্পানিটি বৈধ লিজ হোল্ডার বা প্রতিনিধি ছিল না।
  • 'ঘুষ' হিসেবে ফ্ল্যাট: ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে 'অবৈধভাবে' এই হস্তান্তরের ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ইস্টার্ন হাউজিং থেকে 'অবৈধ পারিতোষিক' হিসেবে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং-B/201, plot no#NE(A)-11B, Gulshan) গ্রহণ করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
  • ফ্ল্যাটের প্রমাণ: তদন্তে দেখা গেছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯/০৫/২০০১ তারিখ থেকে টিউলিপ ওই ফ্ল্যাটটি দখলে ছিলেন। তিনি ২০১৫-২০১৬ করবর্ষে ফ্ল্যাটটি তার ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিককে 'হেবা' করেছেন বলেও প্রমাণ মিলেছে, যদিও ফ্ল্যাটটি এখনো টিউলিপের নামেই নামজারি রয়েছে এবং তিনিই হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করেছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)/৪০৯ (বিশ্বাস ভঙ্গ)/১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক) (ঘুষ সংক্রান্ত ধারা)/১০৯ (অপরাধে সহায়তা) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মুর্তজা আলী সাগর শিগগিরই আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করবেন। এর আগে এই মামলার তদন্তকালে গত ২২ জুন ও ১৪ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যান্য আসামিকে তলব করেছিল দুদক।