পেঁয়াজের দামে কারসাজিতে কৃষি কর্মকর্তারা যুক্ত থাকলে ব্যবস্থা: উপদেষ্টা
Swapnobhumi
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯
স্বপ্নভূমি ডেস্ক:
পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে কৃষি কর্মকর্তাদের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, গতকাল হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। তাও কম না; চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ টাকার মতো দাম বেড়ে গেছে। এ কারসাজি যারা করছেন, সেই চক্রটিকে খুঁজে বের করতে হবে। অনেকেই পেঁয়াজ আমদানি করতে পাগল হয়ে গেছেন। কিন্তু আমাদের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ প্রায় ওঠানো হয়ে গেছে। মুড়িঘাটা পেঁয়াজও উঠানো শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে পেঁয়াজের কোনো সংকটও নেই। বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ আছে। কিন্তু দাম বেড়ে গেছে। ভোক্তাদের কষ্ট পেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমদানি করার পর দেখবেন দাম কমে যাবে। আজই দাম কমা শুরু হয়েছে। আবার বেশি কমা শুরু করলে কৃষকরা লুজার (লোকসান) হবেন, আমদানিকারকরা লাভবান হবে।
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতেই আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে কৃষি কর্মকর্তাদের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসপিদের মতো কৃষি কর্মকর্তাদেরও লটারিতে বদলী করা হবে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই তো আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। আমার তো দুই দিকে খেয়াল রাখতে হবে, কৃষকের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে আবার ভোক্তাক্তাদের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পেঁয়াজের দাম যদি ৭০ টাকার মধ্যে থাকে তাহলে দুই দিকেই সুবিধা।
আলুচাষিরা খুবই ভোগান্তি পেয়েছে জানিয়ে তাদের ভর্তুকি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, আমাদের আলু রপ্তানি হয়। কিন্তু আলুর মান ভালো না। কাজেই যে আলুতে চিপস হয়, সেটা আমাদের এখানে কম উৎপাদন হয়। কাজেই এখন গবেষণা করে আলুর জাত উন্নত করতে হবে। যাতে এটা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে হবে।
কম দামের কারণে আলু চাষিরা সাফার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে ভর্তুকি দেওয়ার একটা চিন্তা আমাদের আছে।
সবজিবর দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দিন যত যাবে, দাম কমতে থাকবে। আশা করছি, এমন যাতে না কমে, যাতে কৃষকদের লোকসান হয়। কৃষকরা যাতে লোকসানে না পড়েন, এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মুলা, কপি যাতে গরুকে খাওয়াতে না হয়।
সারের মজুদের কোনো অভাব নেই জানিয়ে এ উপদেষ্টা বলেন, আমরা তামাক উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করছি। তামাকে সার দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কড়াকড়ি আরোপ করবো। কারণ তামাকে কোনো লাভ নেই। এটায় মানুষের শুধুই ক্ষতি। আমাদের দেশে গরুকে সার খাওয়ানো হয়। মাছে সার দেওয়া হয়। এতে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। কাজেই সারের ব্যবহার কমাতে হবে।
আবার কীটনাশকের কয়েকটি জাত খুবই খারাপ। এগুলো বাজার থেকে বন্ধ করতে হবে। কীটনাশক দেওয়ার পরদিনই সেটা বাজারজাত করা হয়। যা অনেক বেশি ক্ষতিকর। এ বিষয়ে সবাইকে নজর দিতে হবে।
৭০ শতাংশ পর্যন্ত আমন ধান কর্তন শেষ হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করছি এবারও আমলের বাম্পার ফলন হবে যদি কোনো রকমের ক্ষতি না হয়।
কারসাজি নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যারা কারসাজি করবেন, তাদের চাকরি থাকবে না। আমার আমলে যত শাস্তি হয়েছে, এরআগে কখনো এতটা হয়নি। কৃষি কর্মকর্তাদের যদি কোনো যোগসাজশ থাকে, তাহলে তারা ধরা খাবে।
আপনার মতামত লিখুন :